By Piyali De

মেয়েটাকে রোজ দেখি,জানা হয়নি ওর নাম,
কি এসে যায় নামে? জীবন তো সেই একইরকম,কপালে বদনাম।
নয়নতারা নাম দি যদি, দুর্গা অথবা সীতা;
রোগাটে গড়নে শ্যামলা বরনে মায়াবী চোখের পাতা।
ভোরের বাতাসে হিমেল আবেশে সুখের আয়েশ সরিয়ে,
বর্ষা,গরমে,পুজোপার্বণে, শীতের চাদর জড়িয়ে।
সাড়ে চারটের বনগাঁ লোকালে ঢুলতো মেয়েটা বসে,
ছেঁড়া আঁচলে কালশিটেগুলো ঢাকার মিথ্যে প্রয়াসে।
চঞ্চলা বড়ো চঞ্চল ঘরে চঞ্চল তাই মন,
বাবুর বাড়ি বাসন মেজে কাটতো যে জীবন।
সকাল থেকে সন্ধ্যে হয় এবাড়ি সেবাড়ি খেটে,
সাড়ে ছটার ফিরতি লোকালে ঘরের পথে ছোটে।
দিনের পর দিন যে পেরোয়ে বাঁচার লড়াই লড়ে,
সম্মানটুকু বাঁচায় তবু শকুন চিলের ভিড়ে।
বারোতেই তো বিয়েটা হয় মাতাল বখাটে বর,
পেটের খিদে মিটতো না , শুধু জরায়ু উর্বর।
একুশে যখন নবপল্লবে কুসুমিত যৌবন,
চার ছেলেমেয়ের মা সে তখন ধুঁকছে যে জীবন।
অপুষ্ট বুকে হায়নাটা তবু আঁচড়ায় রোজ রাতে,
সারাদিনের ক্লান্ত শরীরে ধর্ষিত বিছানাতে।
জানতে চাইলাম, হ্যাঁরে মেয়ে, ভালোবেসেছিস কোনোদিন?
বিস্ফারিত তার অবাক চোখে বিস্ময় অন্তহীন।
অস্ফুট স্বরে একগাল হেসে ফিসফিসিয়ে কয়,
পুতুল খেলার বয়স ছিল গো যেদিন বিয়ে হয়।
বাবার ঘরের আবর্জনা স্বামীর ঘরে এলাম,
আস্তাকুড়ের জীবন ছেড়ে নরক কাছে পেলাম।
টলমলে পায়ে নেশার ঘোরে রাতের আঁধারে এল,
মনটা নয়গো,শরীরটা শুধু চেটেপুটে খেয়ে গেল।
ভালোবাসা মানে রাতের আঁধারে ক্ষতবিক্ষত যৌবন,
ভালোবাসা মানে সঙ্গী পুরুষের পৌরুষ দর্শন।
ভালোবাসা মানে বুকের কষ্ট চোখের কোনে জ্বালা,
ভালোবাসা মানে আধপেটা খেয়ে জোয়াল কাঁধে চলা।
শারদপ্রাতে দেবের তেজে মা তোমার আগমন,
কোন তেজে মা ধরার দেবীর হবে জাগরণ?